May 19, 2024, 1:40 am

অভিশ্রুতি শাস্ত্রীই বৃষ্টি খাতুন, বাবার নাম সবুজ শেখ

অনলাইন ডেস্ক:

রাজধানীর বেইলি রোডে ভবনে অগ্নিকাণ্ডে মারা যাওয়া অভিশ্রুতি শাস্ত্রী নামের এক তরুণীর মরদেহ নিজের মেয়ের বলে দাবি করেছেন কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলা থেকে আসা সবুজ শেখ নামে এক ব্যক্তি।

আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় বাবা সবুজ শেখ শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে এসে মরদেহ শনাক্ত করেন। কিন্তু বিপত্তি বাধে নাম-পরিচয় নিয়ে। সবুজ শেখের দেখানো এনআইডি কার্ডে বাবার নামের জায়গায় সবুজ শেখ থাকলেও মেয়ের নাম লেখা বৃষ্টি খাতুন। এ কারণে প্রতারক ভেবে পুলিশ সবুজ শেখকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

সবুজ শেখ জানান, তার মেয়ের নাম বৃষ্টি খাতুন। তাদের বাড়ি কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার বনগ্রামে।

সহকর্মী ও পরিচিতরা বলছেন, মারা যাওয়া ওই তরুণীর নাম অভিশ্রুতি শাস্ত্রী। তিনি দ্য রিপোর্ট ২৪. ডটকম নামে একটি নিউজ পোর্টালে কাজ করতেন। সেখানে জীবন বৃত্তান্তে তার নাম ছিল অভিশ্রুতি শাস্ত্রী।

সুবজ শেখ জানান, আগুনে পুড়ে মারা গেছে মেয়ে বৃষ্টি খাতুন। এমন খবর পেয়ে কুষ্টিয়া থেকে ছুটে এসেছেন ঢাকায়। রাত থেকে অজ্ঞাতপরিচয় পড়ে থাকা মেয়ের মরদেহ দেখে তার পরিচয় শনাক্ত করেন।

মা বিউটি বেগম বলেন, ‘আমার তিন মেয়ে। এর মধ্যে বড় বৃষ্টি, মেজ মেয়ে ঝর্ণা একাদশ শ্রেণিতে পড়ে। ছোট মেয়ে বর্ষা দশম শ্রেণির ছাত্রী। কিছুদিন আগে বৃষ্টি আমার কাছে টাকা চায়। তার শরীরে সমস্যা ছিল। জানতে চাইলে শুধু বলত, খুবই সমস্যায় আছি, পরে বলব।’

রমনা কালি মন্দিরের সভাপতি উৎপল সাহা বলেন, ‘গত আট মাস ধরে আমাদের সঙ্গে অভিশ্রুতির পরিচয়। মন্দিরে নিয়মিত আসতেন। আমাদের মন্দিরের সঙ্গে অনেকটাই কানেক্টেড তিনি।’

গতকাল বৃহস্পতিবার বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে অগ্নিকাণ্ডে মারা যান অভিশ্রুতি শাস্ত্রী। তার মরদেহ শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের হিমঘরে রাখা হয়েছে। এর আগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার আঙুলের ছাপ সংরক্ষণ করা হয়। অভিশ্রুতি সদ্য ইডেন মহিলা কলেজ থেকে স্নাতক পরীক্ষা দিয়েছেন। ঢাকার মৌচাকের সিআইডি অফিসের বিপরীতে একটি মেসে থাকতেন। পড়াশোনার পাশাপাশি সাংবাদিকতায় নিয়োজিত ছিলেন।

অভিশ্রুতির বান্ধবী জশোয়া জানান, অভিশ্রুতির বাঁচার প্রচণ্ড ইচ্ছা ছিল। ঘুরে বেড়াতে ভালোবাসতো। ইচ্ছা ছিল পৃথিবীর অনেক জায়গা ঘুরে দেখবে। কিন্তু এসব আর কিছুই হলো না। মুহূর্তে চলে গেল।

দ্য রিপোর্ট ডট লাইভের চিফ রিপোর্টার গোলাম রাব্বানী জানান, চাকরির বায়োডাটায় তার নাম অভিশ্রুতি শাস্ত্রী। তবে এটি তার পারিবারিক নাম কি-না জানি না। মাসখানেক আগে অসুস্থতার কারণে চাকরি ছেড়েছিলেন। অভিশ্রুতির শরীরে ‘সিস্ট’ ধরা পড়েছিল। অপারেশনের পর তিনি সুস্থ হন।

রমনা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. হাবিবুর রহমান জানান, বার্ন ইনস্টিটিউটে এক নারীর মরদেহ আছে। তার বাবা মরদেহ শনাক্ত করেছেন। তবে কয়েকজন বলছেন এই নারী সনাতন ধর্মাবলম্বী। তবে তার কোনো হিন্দু স্বজন নেই। বিষয়টি যাচাই-বাছাই চলছে। পরিচয় নিশ্চিত হলে মরদেহ পরিবারকে বুঝিয়ে দেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরও সংবাদ :